নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমন্বয়ক মাহেরীন চৌধুরী দগ্ধ শরীর নিয়ে ২০ শিশুকে বাঁচিয়ে তিনিও না ফেরার দেশে চলে গেলেন। ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যখন শোকের মাতম, তখন এক শিক্ষিকার আত্মত্যাগের গল্প উঠে এসেছে, যা সবাইকে স্তম্ভিত করেছে। ওই ভয়াবহ মুহূর্তে অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজে সোমবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। রাতেই ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিন দুপুরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাইমারি সেকশনের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় ওই ভবনে ক্লাস চলছিল, যেখানে বহু শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর যখন আগুন ও ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে যায়, তখন শিক্ষক মাহেরীন নিজের জীবন বাজি রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করেন। তিনি দ্রুততার সঙ্গে আতঙ্কিত শিশুদের বের করে আনেন। তার প্রচেষ্টায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী অক্ষত বা সামান্য আহত অবস্থায় ভবন থেকে বের হতে সক্ষম হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই বীরত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজে আটকা পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারান। উদ্ধার অভিযানে থাকা এক সদস্যও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এক অভিভাবক বলেন, ম্যাডাম অনেক ভালো ছিলেন। সেনাবাহিনী আমাদের বলেছে, ওই ম্যাডামের জন্য অন্তত ২০ শিক্ষার্থী বেঁচে গেছে। স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, মাহেরীনের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরো শরীরই ঝলসে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা ৮০ ভাগ বললেও আমার মনে হয়েছে সে শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল। তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে নেওয়ার আগে স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।