টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
আমদানী নির্ভরতা কমাতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ প্রথমবারের মতো মসলা জাতীয় মুল্যবান ফসল কালো জিরা চাষ শুরু করেছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের দেয়া হয়েছে কালো জিরার বীজ, সার ও আর্থিক অনুদানসহ অন্যান্য প্রণোদনা। কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তদারকির কারণে বিশাল চরাঞ্চলে কালো জিরার ফলন হয়েছে ভালো। যমুনার চরাঞ্চলে নতুন ফসল কালো জিরা চাষের সফলতা দেখে এ অঞ্চলের অনেক কৃষক আগামীতে কালো জিরা চাষের পরিকল্পনা করছেন।
জানা যায়, কালো জিরা, ওষুধী গুন সম্পন্ন মূূল্যবান একটি ফসল। দেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমান কালো জিরা বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। সরকারের এতে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়। বৈদেশিক মুদ্রা বাচাতে এবং আমদানী নির্র্ভরতা কমাতে সরকারী নিদের্শনায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ যমুনার চরাঞ্চলে কালো জিরা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় কাকুয়া, হুগড়া, কাতুলী ও মাহমুদনগর ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষককে পরীক্ষামুলকভাবে কালো জিরা চাষে উদ্ভুদ্ধ করা হয়। এজন্য তাদের বিনামুল্যে দেয়া হয় কালো জিরার বীজ, সার, আর্থিক অনুদানসহ অন্যান্য উপকরণ। কৃষকরা সরকারী প্রণোদনা কর্মসুিচর আওতায় তাদের জমিতে কালো জিরার বীজ রোপণ করেন। আগে কালো জিরা চাষের কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তদারকিতে তিনি জমির পরিচর্চা করতে থাকেন। আবহাওয়াও অনুকুলে থাকায় ফলনও হয়েছে আশাতিত ভালো। কালো জিরা চাষীরা বলেন, প্রথমবারের মতো কালো চাষ করে খুশী কৃষকরা। বালুচরে সবুজ প্রকৃতি ফসলের মাঝে মূল্যবান ওষুধি ফসল নামে যে ফসল পরিচিত সেটি হলো ‘কালো সোনা বা কালোজিরা’। ওষুধিগুণে ভরা অর্থকরি এ ফসলটি যমুনা চরাঞ্চলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা আসছেন কালো জিরার জমি দেখতে। ধু ধু বালু চরে কালো জিরা চাষের সফলতা দেখে তারাও আগামী বছর কালো জিরা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কর্মকর্তা কৃষি কর্মকর্তা রুমানা আক্তার জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকী করছে কালো জিরার জমি। যমুনার চরাঞ্চলের আবহাওয়া কালো জিরা চাষের জন্য যথেষ্ঠ উপযোগী। চারটি ইউনিয়নের ১৫ হেক্টর জমিতে কালো জিরা চাষ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামুলক প্রদর্শনী জমিগুলোতে কালো জিরার খুব ভালো ফলন হয়েছে। আগামীতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরাঞ্চলে মৌ বক্স স্থাপনসহ কালো জিরা চাষ সম্প্রসারণ করা হবে। কৃষি বিভাগের তৎপরতায় আগামীতে আরো বেশী কৃষককে কালো জিরা চাষের প্রণোদনা দেয়া হলে মুল্যবান ফসলটি হবে এ অঞ্চলের আরেকটি অর্থনৈতিক খাত।