নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরের সিংড়ায় অটোরিকশাচালককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সিংড়া উপজেলা পরিষদ রোড এলাকার দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সেলিম রেজা। তিনি সিংড়া থানায় কর্মরত।
ভুক্তভোগী অটোচালকের নাম হারুন আলী। তিনি সিংড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশা গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রিকশা নিয়ে চালক হারুন আলী দমদমা থেকে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ রোড় এলাকার দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে পৌঁছলে এএসআই মো. সেলিম রেজা রিকশা দাঁড় করান। এরপর এএসআই সেলিম রেজা ও এক কনস্টেবলসহ তিনজন তার রিকশায় ওঠেন এবং তাদের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় চালক এএসআইকে বলেন, স্যার মিটারের তার সংযোগ ‘লুস’ হয়ে গেছে, গাড়ি যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে আমি হাত দিয়ে তার ধরে এ পর্যন্ত এসেছি।
ভিডিওতে এএসআইকে বলতে শোনা যায়, ‘আরে বেটা আমি তোরে বলছি তুই যা, একেবারে কান ফাটাই ফেলাব, যা যা।’ এ সময় অকথ্য ভাষায় চালককে গালিগালাজ করতে থাকেন এএসআই। একপর্যায়ে এএসআই ক্ষুব্ধ হয়ে তার হাতে থাকা টস লাইট দিয়ে চালকের মাথায় পেটাতে থাকেন। পরে আবারও দ্বিতীয় দফায় চালককে মারধর করতে দেখা গেছে এএসআইকে। এ সময় চালকের কান্নায় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের ধমক ও গালি দিয়ে সরিয়ে দেন এএসআই। এরপর চালক ওই এএসআইসহ তিনজন রিকশা নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী চালক হারুন আলী বলেন, রাতে দমদমায় আমার রিকশার মিটারের তার ছিঁড়ে যায়। আমি এক হাত দিয়ে তার চেপে ধরে অনেক কষ্টে বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় কোর্ট মাঠ পার হলে দুই পুলিশসহ তিনজন রিকশা থামান। তারা আমাকে বলেন, তোকে সিগন্যাল দিলাম, তুই দাঁড়াইলি না কেন? আমি বললাম, আমি বুঝতে পারিনি স্যার। আমার গাড়ির মিটারের একটি তার ছিঁড়ে গেছে, তাই মেরামত করতে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এ সময় তিনজন আমার রিকশায় চড়ে বলে- চল থানায়। এরপর আমাকে ওই এএসআই পুলিশ অনেক মারধর করতে থাকেন। পরে আমার নষ্ট গাড়িতে তিনজন উঠে জোর করে আমাকে দিয়ে টেনে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যান। আমরা গরিব মানুষ বলে কি আমাদের কোনো ইচ্ছা নেই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সেলিম রেজা বলেন, আমি কোনো রিকশাচালককে মারধর করিনি। বাসস্ট্যান্ডে রিকশাচালক নেতা শরিফ উপস্থিত ছিলেন। তার কাছে প্রয়োজনে আপনি জানতে পারেন।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানা নেই। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর অভিযোগ না পেলেও তদন্ত করে আইনগতভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।