নেত্রকোনা থেকে জাহিদ হাসান : সম্প্রতি জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের উপর হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত করে গেলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও মাইনোরিটি ওয়াচের সভাপতি এডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ।
জানা যায় বিগত ১৫ই নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর হয়েছে মর্মে ভারতের নিউজ চ্যানেল রিপাবলিক বাংলাতে একটি খবর প্রচারিত হয়।তারই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়,মূলত:জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের থেকে ঘটনার সূত্রপাত।জনৈক রাজন রবিদাস ১৬ই নভেম্বর জেলা পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগে বলেন মানার কান্দি গ্রামে তাদের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে ঘর দরজা ভেঙে লুটপাট ও মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয় অভিযোগ পত্রে।তিনি আরোও জানান, ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতেই তাদের উপর এই হামলা করা হয়।
অপরদিকে অভিযুক্তদের একজন এনামূল হক জানান, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা সব সাজানো। জমি সংক্রান্ত ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই তাদের প্রতিপক্ষ সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। তিনি আরোও জানান, বিরোধপূর্ণ জমিটি তার পিতা রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে ক্রয় করেছিলেন ও তাদের ভোগ দখলীয় আছে। পিতার মৃত্যুর পর পরবর্তীতে গ্রামের কতিপয় মানুষের প্ররোচনায় রবিদাস গংরা উল্লেখিত জমিটি দখলে নেয়ার পায়তারা শুরু করে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে
আমি বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করি, যার নং ৭০২/২০২৪। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত বিগত ৪ নভেম্বর উক্ত ভূমিতে ১৪৫ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিবাদপূর্ণ জমিতে ঘর নির্মাণ
করে। এমতাবস্থায় গত ১১ই নভেম্বর আমি মোহনগঞ্জ থানায় ৬৯/২০২৪ নন এফআইআর দায়ের করি। এতে তারা ভীত
হয়ে নিজেরা ঘর ভাংচুর করে আমাদের দোষারোপ করে বিভিন্ন সংবাদপত্র মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে সমাজে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
হিন্দু কল্যাণ ফ্রন্ট মোহনগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক মিহির গোস্বামী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জানান,জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রুপ দেয়ার চেষ্টা করা ঠিক হয়নি,আমরা এর নিন্দা জানাই,এই উপজেলা সম্প্রীতির উপজেলা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি এডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ জানান, এখানে সিভিল মামলা ও ক্রিমিনাল ওফেন্স দুটোই রয়েছে। আদালতে চলমান সিভিল মামলা বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। আমরা ঢাকায় ফিরে প্রতিবেদন দাখিল করবো।
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আমিনুল ইসলাম বলেন,”আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা উভয় পক্ষকে স্থিথিশীলতা বজায় রাখতে বলেছি,এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।