কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় অটোরিকশা থেকে তুলে নিয়ে এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার তিনজন হলেন পাকুন্দিয়া উপজেলার বীর পাকুন্দিয়া এলাকার আলী আকবরের ছেলে কাউসার আহম্মেদ (২৪), একই এলাকার খসরু মিয়ার ছেলে জুবায়েদ হাসান শুভ (১৮) ও চর পাকুন্দিয়া গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন রাজু (২৪)।
পুলিশ জানায়, গাজীপুরের এক নারী নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এসে গত শনিবার বিকালে পার্শ্ববর্তী তারাকান্দি বাজারে ঘুরতে যান। সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধু সাব্বির হোসেন (১৮), সাব্বিরের মামা সম্পর্কিত অটোচালক হুমায়ুন কবির (২১) ও সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ।
এ সময় স্থানীয় বখাটে যুবক কাউসার আহম্মেদ (২৪), জুবায়েদ হাসান শুভ (১৮), মেহেদী হাসান (২২), হৃদয় (৩২), বাবু (২২), তোফাজ্জল হোসেন রাজু (২৪) ও ইয়াসিন (২৫) অটোরিকশাটিকে তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে মুক্তিপণ বাবদ তারা ভিকটিমের বন্ধু সাব্বিরের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে অটোরিকশাসহ তরুণীকে আটকে রাখার হুমকি দেয়।
বখাটেরা অটোরিকশার চালক ও ভিকটিমের বন্ধু আশরাফকে মাদ্রাসার মাঠে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে তরুণীকে মাদ্রাসার পাশে জনৈক রানা ভূঞার একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমে হৃদয়, পরে মেহেদী, বাবু, কাউসার এবং জোবায়ের হোসেন শুভ পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে। ঘটনার সময় মাদ্রাসার মাঠে থাকা সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহের কথা বলে কৌশলে থানায় এসে পুলিশকে জানায়।
পাকুন্দিয়া থানার এসআই দ্বীন ইসলাম, এসআই নাজিম উদ্দিন, এএসআই রাকিব উজ্জামান খান তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার ও তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আল আমিন হোসাইন ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে জানান, একের পর এক যুবক কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষিত হয়ে যাচ্ছিল তরুণীটি। পুলিশের অবস্থান বুঝে সটকে পরে প্রায় সকল অপরাধী। তবে কাউসার আহম্মেদ ও জুবায়েদ হাসান শুভকে পালানোর সময় দৌড়ে ধরে ফেলেন এসআই (নি.) দীন মোহাম্মদের টিম। পরে পুলিশের অভিযানে তোফাজ্জল হোসেন রাজু নামে তাদের এক সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনায় রবিবার পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণে সহায়ক আলামত জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ভিকটিম ও গ্রেফতার আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।