যশোর প্রতিনিধি :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় পিয়াল হাসান (২৮) নামে এক যুবদলকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঝিকরগাছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত পিয়াল উপজেলার মোবারকপুর এলাকার বিশ্বাসপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে। স্বজনের অভিযোগ, স্থানীয় এক ছাত্রদল নেতা ও বিএনপির কর্মীরা তাঁকে খুন করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনসহ বিভিন্ন ধারায় ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, রাজনীতির পাশাপাশি পিয়াল ঝিকরগাছা বাজারে মুরগির ব্যবসা করতেন। গতকাল দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর নুরুজ্জামান বাবু, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি শামীম রেজাসহ কয়েকজন সেখানে সশস্ত্র হানা দেয়। এ সময় শামীমের কাছে বারবার ক্ষমা চান পিয়াল। তারপরও তাঁকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে তারা। প্রাণ বাঁচাতে পিয়াল বাজার থেকে পালালে তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে একটি বারান্দায় পিয়ালকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত পিয়াল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান নিপুণের অনুসারীদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। অভিযুক্তরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোর্তজা এলাহী টিপুর অনুসারী। গত ৫ আগস্ট ঝিকরগাছা বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কাউন্সিলর বাবুর অনুসারী ছাত্রদল নেতা শামীমের সঙ্গে পিয়ালের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে সেদিন বাবু, শামীমসহ কয়েকজন পিয়ালের দোকান ভাঙচুর করে। পরে শামীমের বাবা কামরুলকে পিটিয়ে আহত করেন পিয়াল। এ ঘটনায় মামলা হলে সম্প্রতি তিনি আত্মসমর্পণ করেন। গত বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত পান পিয়াল। ওই দিন রাতেই ছাত্রদল নেতা শামীমসহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসে।
পিয়ালের ছোট ভাই সুমন হাসান বলেন, ‘জামিনে মুক্তির পর থেকে আমার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল নুরুজ্জামান বাবু ও শামীম রেজা। আমার ভাই কয়েক দফা তাদের কাছে মাফ চেয়েও রেহাই পেল না।’
পিয়ালের পরিবার তাঁকে যুবদলকর্মী বলে দাবি করলেও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুণ বলেন, সে একসময় যুবদল করত। তবে বিগত সরকারের শেষদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসা মাহমুদের নেতৃত্বে চলাফেরা করত।
যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, নিহত পিয়াল ও অভিযুক্তরা একই দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পূর্ববিরোধের জের ধরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। পিয়ালের নামে ১০টি মামলা রয়েছে। তাঁকে হত্যায় জড়িতদের পুলিশ চিহ্নিত করেছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।