আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানের দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান দুজনই দেশটির সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দাবি করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শরিফের দল একক দল হিসেবে সর্বাধিক আসন জিতেছে। তবে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে বাধা পাওয়া কারাবন্দি ইমরানে খানের সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সর্বাধিক আসন নিয়ে এগিয়ে আছেন। খবর রয়টার্স।
নওয়াজ শরিফ বলছেন, ‘তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জোট সরকার গঠনের জন্য অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে কথা বলবে।’ ২৬৫টি আসনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি ফলাফল ঘোষণা করার পর নওয়াজ শরিফ এ ঘোষণা দেন।
অবশ্য বিশ্লেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন কোনো পক্ষ এককভাবে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্টতা নাও পেতে পারে। যা পাকিস্তানের গভীর মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক সংকটকে আরো জটিল করে তুলবে।
২৪৫টি আসনের ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় ৯৮টিতে জিতেছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৬৯ ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫১টি আসন। বাকিগুলো জিতেছে ছোট দল ও অন্যান্য স্বতন্ত্ররা।
পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের বাড়ির বাইরে এক জমায়েতে গতকাল নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘নির্বাচনের পর দেশের একক বৃহত্তম দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ। এ দেশকে ঘূর্ণিবর্ত থেকে বের করে আনা আমাদের কর্তব্য।’
সঙ্গে জানান, স্বতন্ত্র হোক বা দলীয়, যারাই জয় পেয়েছেন তাদের সম্মান করেন। একসঙ্গে কাজ করে পাকিস্তানকে পুনর্গঠনের আহ্বানও জানান সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে পিটিআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ইমরান খানের একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল বার্তা প্রকাশ করেছে। সেখানে নওয়াজ শরিফের বিজয়ের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন কারাবন্দি এ নেতা। নির্বাচনে জয় লাভের জন্য সমর্থকদের অভিনন্দন জানান তিনি।
ইমরান খান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনারা সবাই ভোট দিতে আসবেন। আপনি সেই আস্থাকে সম্মান করেছেন। আপনার ব্যাপক অংশগ্রহণ সবাইকে হতবাক করেছে।’
আরো জানান, কারচুপি করে নওয়াজ শরিফ জিতেছেন। তার দাবি কেউ মেনে নেবে না।
গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছে সাবেক এ ক্রিকেট সুপারস্টার। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও বেআইনি বিয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খাটছেন তিনি।
পাকিস্তানে চলমান সন্ত্রাসী হামলা ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় স্থিতিশীল রাজনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছিলেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে জোট সরকারকে একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লড়তে হবে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন একটি বেলআউট প্রোগ্রামের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে পাকিস্তান। এ সহায়তার জন্য স্থিতিশীলতার ওপর মনোযোগ থাকবে সবপক্ষের। জোট সরকারের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত দলগুলোর মাঝে ভারসাম্য করাও নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে থাকবে।
অপরাধচিত্র /এম এম