নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রতারণায় অর্জিত সব অর্থ-সম্পদ ফ্রিজ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর কথা বলে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সোহেল আহমেদ অপু (২৮), ইব্রাহিম (৩০) ও আকাশ (২৪)।
সিআইডি প্রধান বলেন, যারা প্রতারণা করে গাড়ি-বাড়ি করছে এবং বিদেশে অর্থপাচার করছে তাদের নামে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। সেই সঙ্গে তাদের সব সম্পদ, টাকা, ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ ফ্রিজ করা হবে। যারা প্রতারণা করে মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে টাকা পাচার করছে আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেবো না। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু ঘটনায় এমন অর্থ ফ্রিজ করেছি। এখনও আরও কিছু কাজ চলছে।
গ্রেপ্তার তিনজনের প্রতারণার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের একজনের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় সুমন আল রেজা (৪০) নামে এক ব্যক্তির। পরিচয়ের এক পর্যায়ে ওই প্রতারক নিজেকে ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের একজন ক্লায়েন্টের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে। সেই ব্যক্তি গত ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর মারা গেছেন। কিন্তু তার কোনো ওয়ারিশ নেই।
এরপর সুমন আল রেজাকে ওই ব্যাংক ক্লায়েন্টের ওয়ারিশ হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন প্রতারক। তার ডিপোজিট করা টাকা উত্তোলনের পর দুজনে সমানভাগে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেন তাকে। একপর্যায়ে সুমন আল রেজার কাছে লাগেজ ভর্তি ডলার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো চার্জ বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন প্রতারক। সেই টাকা দেওয়ার পর প্রতারক চক্রটি ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) দাবি করে। এবার রেজা লাগেজ ভর্তি ডলারের প্রলোভনে পড়ে যান। সেই প্রতারক চক্রের কথা মতো বাংলাদেশ ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) গোল্ডেন লজিস্টিক এন্টারপ্রাইজের ডাচ বাংলা ব্যাংক ঢাকার মিরপুর-১০ শাখায় পাঠিয়ে দেয়। রেজা অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখতে পান তার অ্যাকাউন্টে কোনো ডলারই ঢোকেনি। তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় গত বছরে ১৭ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে মূলহোতা তপুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
সিআইডি প্রধান বলেন, ইদানিং যেকোনো ব্যক্তিকে ফোন কল করে অথবা ফেসবুকে বিনা বিনিয়োগে অর্থ কামানো যায় বলে প্রলোভন দেখাচ্ছে বিভিন্ন চক্র। তারা ফোন করে বলবে ৩০০ টাকা বিনিয়োগ করলে ৬০০ টাকা পাবেন, বাসায় বসে বিনা পুঁজিতে লাভবান হবেন, নানা কথা বলে আকৃষ্ট করছে। তাদের ফাঁদে পা দিলেই তারা একটি লিংক পাঠায়। তাতে ক্লিক করলে তারা টোপ হিসেবে কিছু টাকা দিচ্ছে এরপর সেই লিংক বন্ধ করে দিচ্ছে। পরে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে চক্রটি। চক্রটির সঙ্গে বিদেশি একটি চক্র জড়িত। আমরা তাদের নিয়েও কাজ করছি।