বৃহস্পতিবার , ২৯ মে ২০২৫ | ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জাতীয়
  10. জেলার খবর
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. প্রবাসের কথা
  14. বরিশাল
  15. বিনোদন

ভুয়া প্রতিবেদনের জেরে সিঙ্গাপুরে যেতে পারছে না কয়েক শ’ দক্ষ শ্রমিক

প্রতিবেদক
Newsdesk
মে ২৯, ২০২৫ ৮:৫০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গেল এক যুগের বেশি সময় ধরে স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড সিঙ্গাপুরে জনশক্তি রফতানি নিয়ে কাজ করছে। ম্যানপাওয়ার মার্কেটে তাদের রয়েছে আশাতীত সুনাম। বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটির ট্রেনিং ও ডেলিগেশন, ভিসা প্রসেসিং এবং অপরাপর সেবা প্রাপ্তিতে যার পর নাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রবাসীরা। এমনকি তাদের আত্মীয়স্বজনেরাও বিএমইটিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড সম্পর্কে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির সেবা ও প্রশিক্ষণের কাছে ধরাশায়ী হয়ে হিংসার বশে এ চক্রটি স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ করে। মিথ্যা রিপোর্টের ফাঁকে তাদের প্রতিষ্ঠানে হয়তো প্রশিক্ষনার্থী সংখ্যা বাড়বে-এমনই আশা করেই তারা অপপ্রচারের পথ বেছে নেয়। কিন্তু তার আগেই স্টানফোর্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধী শনাক্ত করতে সক্ষম হয় কতৃপক্ষ।

কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা গ্রামের খান মোহাম্মদ নয়নের সঙ্গে। শ্রমিক ভিসায় সিঙ্গাপুরে যাবেন। সবকিছু প্রায় ঠিক। দরকার শুধু প্রশিক্ষণ। দক্ষ কোন কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং পেলেই সিঙ্গাপুর যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। সেই আশাতে রাজধানীর তুরাগ এলাকার স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিঃ ভর্তিও হয়েছিলেন। মাঝপথে শুনলেন প্রতিষ্ঠানটির নথিপত্রে ঝামেলা। অতপর খান মোহাম্মদ নয়ন ধর্ণা দিলেন এর ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষের কাছে। শেষতক জানলেন, ঘটনা কিছুই না। প্রতিপক্ষ আরেকটি প্রতিষ্ঠানের লেলিয়ে দেয়া কিছু ব্যক্তি ফেসবুক আর অনলাইনে স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে মনগড়া রিপোর্ট লিখেছে। আর তা ইচ্ছে মতো ছড়িয়েও দিয়েছে তাদেরই লোকজন।

নাটোরের বড়াইগ্রামের মৌসুমী আক্তার ও তার স্বামী হাফিজুল ইসলাম প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে গেছেন আরেকটি ট্রেনিং সেন্টারে। যেখানে গিয়ে নতুন করে টাকা জমা দিলেও ট্রেনিং এর প্রসিডিওর অনুযায়ী কাঙিক্ষত প্রশিক্ষণ পান নি। এই দুই ভূক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক টেলিভিশনকে সঙ্গে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু এক্সফাইলসের বিশেষ টিম। তাতে উঠে আসে ভয়ঙ্কর এক প্রতিহিংসার চিত্র। যাতে যুক্ত রয়েছে বিদেশ পাঠানোর নাম করে হাজারো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতারণা করা হঠাৎ গজিয়ে ওঠা গডফাদারের এক প্রতিষ্ঠানের নাম। ইঙ্গতপূর্ণ ভাষায় সেই প্রতিষ্ঠানের নামও স্বীকার করেছে মন্ত্রণালয় আর বিএমইটি।

এ ব্যাপারে স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিস্টার উত্তম কুমার রায় বলছেন, আমরা সবার সঙ্গে মিলেমিশে সেবাধর্মী ব্যবসাটি পরিচালনা করে আসছি। হঠাৎ করে আমাদেরই পরিচিত একজন কম্পিটিশনে না পেরে এখন প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছি। এমনকি আমাদের লাইসেন্সসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট থাকা সত্বেও নির্জলা মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সিঙ্গাপুরে সর্বত্র তারা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এতেই প্রমাণ হয়, তারা কেনো-কী উদ্দেশে এক কাজটি করছেন।

এ ব্যাপারে বিএমইটির শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে করা রিপোর্ট ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আমাদের নজরে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক তাদের বিরুদ্ধে করা রিপোর্ট আমাদের দফতরে জমা দিয়ে এ ঘটনার প্রতিকার কামনা করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে স্টানফোর্ড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সাথে কথা বলেছি। আমরা গুরুত্বের সঙ্গে ব্যাপারটি অনুসন্ধান করছি। তাদের প্রতিপক্ষ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কারণ প্রতিষ্ঠানটি কোন না কোনভাবে দেশের ক্ষতি করছে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই মুহূর্তে রেমিটেন্সযোদ্ধাদের আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াবে আমরা তা বরদাশত করব না। প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে দেশবিরোধী এসব প্রতিষ্ঠান লোকেট করে ব্যবস্থা নিব।

বিএমইটির ঐ কর্মকর্তা নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও বলেন, অনুসন্ধান চলাকালে আমাদের নাম ও পরিকল্পনা প্রকাশ হলে অপরাধীরা ভিন্ন কোন পন্থা বেছে নিতে পারে। তাঁর অভিমত, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের কমপিটিশন থাকবে। তাতে দেশের সুনাম ও সদ্ব্যবহারে কোন প্রভাব যাতে না পড়ে তার চেষ্টা সবারই থাকা উচিত। হিংসা ও গ্লানি নিজের যেমন ক্ষতি করে তেমনি দেশেরও সুনাম নষ্ট করে। ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও ট্রেনিং সেন্টারের বিশেষত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা হতেই পারে। কিন্তু অযথা আন্ডারগ্রাউন্ডে খবর প্রকাশ আর অপপ্রচার চালিয়ে দেশের সুনাম ও রেমিটেন্সে প্রভাব ফেললে আমরা সেটা বরদাশত করব না। তাদেরকে আমরা শাস্তির আওতায় আনব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড দক্ষ কারিগরি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন যাবৎ এটি সুনামের সাথে ট্রেনিং পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে বহু সংখ্যক বেকার যুবক সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে গেছেন। যাদের বেশিরভাগই এখন স্বাবলম্বী। মাসে মাসে পাঠাচ্ছেন রেমিটেন্স। এসব যোদ্ধাদের বড় অংশই নির্দিষ্ট সময় প্রবাসে থেকে দেশে ফিরে আবারও গেছেন। প্রবাসীদের মাধ্যমে ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্টের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে ভিন্ন ভিন্ন দেশে। এ কারণেই কুচক্রীমহল ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশে ও বিদেশে অপপ্রচারে নেমেছে। এতে ট্রেনিং করানো যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি প্রভাব পড়েছে ডেলিগেশনে।

সবমিলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক কয়েক’শ স্বপ্নচারী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসচিবকে ব্যাপারটি জানালে অতি গুরুত্বের সঙ্গে তিনি অভিযোগ আমলে নেন। বলেন- স্টানফোর্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও ন্যানিয়াং স্টানফোর্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড একটি পরিক্ষিত নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। তাদের সমস্ত ডকুমেন্ট চেক করে কোথাও কোন সমস্যা দেখিনি। তাদের লাইসেন্স আপডেট ও সেবার মান নিয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। অচিরেই কুচক্রি প্রতিষ্ঠানটিকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ - জেলার খবর