সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারনে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। শুধু জেলা সদর হাসপাতালেই নয় জেলার ১২টি উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের একেই অবস্থা। এ অবস্থায় কর্মরত মেডিকেল অফিসারদের পাশে থেকে সহায়তা করছেন মেডিকেল এসিস্ট্যান্টগন।
এ কারনে প্রতিদিন হাসপাতালে যে পরিমান রোগী আসে চিকিৎসা সেবা নিতে,সে পরিমান চিকিৎসা না থাকায় মেডিকেল এসিস্ট্যান্টগন চিকিৎসায় সহায়তা করায় যেন স্বস্তি নিঃশ্বাস ফেলেন কর্মরত চিকিৎসক ও সেবা গ্রহিতাগন।
সচেতন মহল বলছেন,সম্প্রতি ভুয়া ডাক্তার বলে সংবাদ প্রকাশে সর্ব মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করে। কারন যাকে ভুয়া ডাক্তার বলা হয়েছে সে একজন মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট। হাসপাতালে এমনিতেই চিকিৎসক সংকট,জনবল নেই এর মধ্যে ভুয়া ডাক্তার বলে প্রচার করায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিন হাসপাতালের কয়েকটি কক্ষে দেখা গেছে, হাসপাতালে আগত অতিরিক্ত রোগীদের সামাল দিতে পারছে না মেডিকেল অফিসারগন। আউটডোরে ও জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন কক্ষে মেডিকেল অফিসারগন আগত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। পাশে সহায়তা করেছেন মেডিকেল এসিস্ট্যান্টগন। তারাও আগত রোগীদের সমস্যার বর্ননা শুনে মেডিকেল অফিসার এর পরামর্শ নিয়ে সাদা কাগজে (স্লীপে) সরকারী ঔষধ লিখে দিচ্ছেন।
সদর হাসপাতালের আউটডোর ১০ নং কক্ষে গিয়ে দেখা যায় মেডিকেল অফিসার জহর লাল রায় আগত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি আগত রোগীগনদের সমস্যার কথা শুনে মেডিকেল অফিসারের পরামর্শ নিয়ে মেডিকেল এসিস্ট্যান্টগন ঔষধ লিখে দিচ্ছেন। এতে করে লাইনে থাকা দ্রুত রোগীগন চলে যাচ্ছেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা জামিল মিয়া জানান, সদর হাসপাতালে শুধু চিকিৎসক সংকটেই নয় হাসপাতালে বিভিন্ন পদে জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়াও বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে করে কাংখিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সর্বস্তরের জনগণ। এর মধ্যে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট এখন নাই মামার চেয়ে কানা মামার মতই কাজ করছে। তারা থাকায় দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি। তারা না হলে দীর্ঘ লাইন ধরে দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে হতো।
সুনামগঞ্জ সদরের বাসিন্দা জহির আহমেদ বলেন, ডাক্তার জহর লাল একজন মানবিক ডাক্তার। তার কাছে গেলে নিজের পরিবারের মত করে দেখে চিকিৎসা দেয় আর ঔষধ কেনার টাকা না থাকালে নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে কিনে দেয় গরীব পরিবার জানলে এমন কাজ টি তিনি করেন। সদর হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার নিয়ে যে নিউজ হয়েছে আসলে জহর লাল ও মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট মেহেদী হাসানের মান হানি করার জন্যই নিউজ। যেমন কান নিয়ে গেছে চিলে অবস্থা।
এসময় মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট মেহেদী হাসান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান,হাসপাতালে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমানে রোগী আসে। আগত রোগীদের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সামাল দেয়া খুবেই কষ্ট কর। এই কক্ষে আমরা কয়েকজন আছি তারা সবাই আগত রোগীদের সমস্যার গুলো শুনে স্যারের পরামর্শে স্লীপে ঔষধ লিখে দিচ্ছি সরকারী ভাবে বিনা মূল্যে ঔষধ যেন নিতে পারে।
ডাক্তার জহর লাল জানান,হাসপাতালে আগত রোগীদের আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিতে চেষ্টা করছি। মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট যারা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসারদের সাথে আছে তারা আমাদের পরামর্শেই আগত রোগীদের স্লীপ ঔষধ লিখে দেয়। তারা থাকায় আমাদের একটু সহযোগিতা হয়। না হলে অতিরিক্ত রোগী সামাল দেয়া খুব কষ্টকর।
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মাহবুবুর রহমান স্বপন জানান, হাসপাতালে কোনো ভুয়া ডাক্তার নেই। এমনকি জেলার কোনো হাসপাতালেই নেই। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তাই মেডিকেল অফিসারদের সাথে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট গন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন এতে করে আগত রোগীদের দ্রুত সেবা নিয়ে চলেও যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান,মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট থাকায় চিকিৎসক সংকটের মধ্যে সহায়ক হিসাবে কাজে লাগছে। হাসপাতালে ৫২ ভাগ চিকিৎসকের পদ শুন্য রয়েছে। এছাড়াও পুরো হাসপাতালের প্রায় ৫৭ ভাগ জনবলের পদ খালি রয়েছে। তবে জনবল সংকটের বিষয় উর্ধবতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।