নিজস্ব প্রতিবেদক :
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৬ জনকে হত্যা মামলায় পলাতক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১৪ জুলাই।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে একই দিন আলোচিত এ মামলায় কনস্টেবল সুজনসহ ৪ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সেই সঙ্গে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন সব আসামিরা। পরে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৪ জুলাই দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ৪ আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
আলোচিত এ মামলায় গত রোববার (২৯ জুন) পলাতক সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আবেদন করেছিল প্রসিকিউশন। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আইজিপির কমান্ডে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ও হামলা চালানোর নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার। যা বাস্তবায়ন করেন সুদীপ কুমারসহ বাকি আসামিরা। কাজেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করাই যুক্তিযুক্ত হবে।
এর আগে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ এই মামলায় পলাতক ৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। আইনজীবী কুতুবউদ্দিনকে তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
গত ২৫ মে চাঁনখারপুলে গুলি করে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম (ফরমাল চার্জ) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করে অভিযোগটি আমলে নেয়ার আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এর আগে মামলার চূড়ান্ত অভিযোগ প্রসিকিউশনের হাতে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। চিফ প্রসিকিউটর জানান, ৯০ পৃষ্ঠার এ তদন্ত প্রতিবেদন ১৯৫ দিনের তদন্ত শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সময়কাল ছিল ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট।
ঢাকা মহানগরীর চাঁনখারপুল এলাকায় গত ৫ আগস্ট শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক এবং মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
তদন্তে উঠে এসেছে, পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন অথবা তা তত্ত্বাবধান করেছেন। তারা অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা ও সহায়তার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনে ভূমিকা রাখেন।