আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
শক্তিশালী ভূমিকম্পে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতে ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্তত ৬২ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালের ভূমিকম্পে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে তিব্বতের পবিত্র শিগাৎসে শহরের এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১ এবং গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল)।
তিব্বত ছাড়াও প্রতিবেশী নেপাল ও ভারতের কিছু অংশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। এ অঞ্চলটি একটি বড় ভূতাত্ত্বিক ভ্রষ্টরেখার উপর অবস্থিত, যেখানে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা।
শিগাতসে তিব্বতের একটি পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি পানচেন লামার ঐতিহ্যগত আসন, যিনি তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, যার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা দালাই লামার পরে দ্বিতীয়।
চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ভূমিকম্পের মাত্রা কিছুটা কম, ৬ দশমিক ৮ মাত্রার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে স্পষ্ট কম্পন অনুভূত হয়েছে এবং হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চীন ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্রের গবেষক বলেছেন, ‘একটি বড় ভূমিকম্পের পরে, সবসময় একটি ধীরে ধীরে প্রশমিত হওয়ার প্রক্রিয়া থাকে। এখনও আরেকটি ৫ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটতে পারে। তবে বড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা কম।’
এদিকে, চীনা বিমানবাহিনী উদ্ধার কাজ শুরু করেছে এবং ড্রোন পাঠিয়েছে আক্রান্ত অঞ্চলে, যা এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত এবং সেখানে তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে। এলাকাটির বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংও সব ধরনের অনুসন্ধান এবং উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন যাতে ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা যায়।
তিব্বতের অঞ্চলটি ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটনিক প্লেটের বড় ভ্রষ্টরেখার কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে বারবার ভূমিকম্প হয়। ২০১৫ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছাকাছি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯,০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ২০,০০০-এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি।