নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। একইসঙ্গে আগামীতে জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে এবারের নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দিতে পারবেন। আর ভোটের পদ্ধতি হবে পোস্টাল ব্যালট। পোস্টাল ব্যালটের যে সীমাবদ্ধতা ছিল, সেটা কাটানোর জন্য এবারের পদ্ধতি হবে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট। আগে একজন ভোটারকে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফিজিক্যালি আবেদন করতে হতো একটা পোস্টাল ব্যালটের জন্য; এখন নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তারা আবেদন করতে পারবে। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে—যে ব্যালটটা পাঠানো হতো ভোটারের কাছে, সেটা প্রথমে রিটার্নিং অফিসারের কাছে যেতো তারপর তিনি পাঠাতেন। এতে সময়ক্ষেপণ হতো। তাই আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি ব্যালটটা ছাপানোর পরে সহকারী রিটার্নিং অফিসার বা অন্য কারও উপস্থিতিতে সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, আরেকটা প্রস্তাব এসেছে, পৃথিবীর কোন কোন দেশে ব্ল্যাংক ব্যালট আছে। গ্লোবালি পোস্টাল ব্যালটের একটা ওয়েস্টেজ রেট আছে। গ্লোবাল ওয়েস্টেজ রেট হচ্ছে অ্যারাউন্ড ২৪ শতাংশ। আমাদের মতো যাদের সুবিন্যস্ত এবং বিস্তৃত ডায়েস্পোরা (প্রবাসী) আছে, তাদের জন্য এই ওয়েস্টেজ রেট আরও বেশি। এটা প্রায় ৫০ শতাংশ।
তিনি বলেন, এখানে আমাদের একজন কমিশনারের কাছ থেকে আরেকটা সিদ্ধান্ত এসেছে, আমরা যদি সব মার্কা শুধু ছাপিয়ে দুই মাস আগেই পাঠিয়ে দেই এবং চূড়ান্ত মার্কাতে যদি শুধু ভোটটা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়, তাহলে হয় কিনা। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি টেকনিক্যাল কমিটি আবার এটা রিভিউ করুক।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে আমরা একটা প্রকল্প হাতে নেবো। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রাথমিকভাবে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। আগের পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতিতে ভোট না আসলেও এই পদ্ধতিতে ভোট আসবে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রক্সি ভোট থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন। অনলাইন পদ্ধতির ট্রায়াল পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবো। পোস্টাল ব্যালটে ভোট নিতে একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোট আনতে প্রতি ভোটে ৭০০ টাকা ব্যয় হবে।
ইভিএম’র ব্যবহার বন্ধের প্রসঙ্গে সানাউল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যমত এবং সংস্কার কমিশনের সুপারিশ উভয় ক্ষেত্রেই ইভিএম’র পক্ষে মত এখন পর্যন্ত নেই। আমরা শুরুতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না। আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোন স্থানীয় নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার হবে না। অর্থাৎ এই ইভিএম সামনের কোন নির্বাচনেই আর ব্যবহার হবে না। এমতাবস্থায় এই ইভিএম কীভাবে কী করতে হবে—তার জন্য একটা কমিটি ফর্ম করতে বলা হয়েছে।