নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার ও চুমুক রেস্টুরেন্টের দুই দোকান মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন। এছাড়া এ ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
আটকরা হলেন- চা চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক ও শাকিল আহমেদ রিমন এবং কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জিসান।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সার্বিক পরিস্থিতি সংক্রান্তে মিডিয়া ব্রিফিং এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ মহিদ উদ্দিন।
এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দায় নিতে হবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, যারা ব্যবসা করছেন, তারা শুধু ব্যবসার কথা চিন্তা করবেন না। মানুষের কথা মাথায় রাখা উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন বলেন, ভবনের মালিকের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, এটা আমরা বলছি না। আমরা তদন্ত করে দেখছি। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ৪৬ জনের মধ্যে ৪১ জনের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনজনের মরদেহ ডিএনএ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আটতলা গ্রিন কোজি কটেজের নীচতলায় অবস্থিত ‘চুমুক’ নামের চা-কফির দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে সংগৃহীত একটি ভিডিওকে তদন্তের বড় আলামত হিসেবে দেখছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনে নিচ তলায় আগুন লেগেছে, আর তা নেভানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।
ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ অফিসার শাহজাহান শিকদার বলেন, একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। আগুনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে এটি পাওয়া যায়। এটি স্থানীয় লোকজন আমাদের দিয়েছে। আমাদের করা ভিডিও না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আটজন ভর্তি আছেন। বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আটজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।