ডেস্ক রিপোর্ট :
সড়কে প্রাণহানি কমছেই না। শুক্রবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের তিন জেলায় তিনটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে নয়জনের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মা-মেয়ে, বাবা-ছেলে, গৃহবধূ, কলেজছাত্র ও অটোরিকশাচালক। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের শান্তিগঞ্জে, রংপুর নগরীর দমদমা ব্রিজের কাছে এবং বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে। প্রতিটি দুর্ঘটনাই ঘটেছে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে বেপরোয়া গতি ও অবহেলাজনিত কারণে ।
রংপুরে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৩
তিন জেলার সড়ক দুর্ঘটনার প্রথমটি ঘটে রংপুরে। ভোর চারটার দিকে রংপুর নগরীর দমদমা ব্রিজের কাছে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বালুবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- রংপুরের মীরগঞ্জের ইউসুফের ছেলে আরিফ, পীরগাছার শাহিনা ও একই উপজেলার সাতদরগার ওয়ালিদ। গুরুতর আহত পিকআপ চালককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ভোর ৪টার দিকে নগরীর তাজহাট থানাধীন দমদমা ব্রিজের উত্তরে মহাসড়কের ওপর একটি মালবাহী পিকআপ মাহিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অভিমুখে এসে ইউটার্ন নেওয়ার সময় বালুর ট্রাককে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলে পিকআপে থাকা তিনজন নিহত হন। পিকআপ চালককে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
তাজহাট থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাজান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। কিন্তু ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
বগুড়ায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
সকাল ৭টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
তারা হলেন-গাইবান্ধার সাঘাটার বিপুল চন্দ্র দাস, তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে বিপ্লব চন্দ্র দাস এবং অটোরিকশাচালক শুকুর আলী। গুরুতর আহত হয়েছেন বিপুলের স্ত্রী মমতা রানী দাস ও মেয়ে রূপা মনি দাস। তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, পরিবার নিয়ে দুর্গাপূজার ছুটিতে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন বিপুল। ফুলবাড়ি কাঁঠালতলা এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই চালক মারা যান এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর বিপুল ও তার ছেলে মারা যান। আহত হন বিপুলের স্ত্রী ও মেয়ে।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ট্রাকচালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
সুনামগঞ্জে মা-মেয়েসহ নিহত ৩
সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। সকাল ৮টার দিকে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারের বাঘেরকোনা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিলপাড়ার আবাদিত কেশবা প্রিয়া, তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রথমা চৌধুরী এবং অটোরিকশাচালক সজল ঘোষ।
পুলিশ জানায়, যাত্রীবাহী অটোরিকশাটি সিলেটের দিকে যাচ্ছিল। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। গুরুতর আহত প্রথমা চৌধুরীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদ জানান, দুর্ঘটনার পর পিকআপ চালককে আটক করা হয়েছে। মরদেহ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।