নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ও এর আগে-পরে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে’—এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে।
লিখিত বক্তব্যে পলাশ কান্তি দে বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা এক সংবাদ সম্মেলনে আশঙ্কা করেছিলাম, এবারও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে। নির্বাচনের পরে সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, গাইবান্ধা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, ঝিনাইদহ, পিরোজপুর, মাদারীপুর, ঠাকুরগাঁও, মুন্সিগঞ্জ, কুষ্টিয়া, লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় “ভোট দেয়নি” এই অজুহাতে নির্বিচারে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।’
পলাশ কান্তি দে আরও বলেন, ‘কোনো কোনো জেলায় পরাজিত প্রার্থী ও কোনো কোনো জেলায় বিজয়ী প্রার্থীও একই অজুহাতে এই নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। সেটা হোক নৌকার প্রার্থী বা হোক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সরকারের নিরাপত্তা দানে ব্যর্থতার কারণে এবার হিন্দু নির্যাতন হয়েছে।’
সংখ্যালঘুদের ওপর এসব হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে লিখিত বক্তব্যে হিন্দু মহাজোটের এই নেতা বলেন, ‘আরও একবার প্রমাণ হলো—যত বারই এ দেশে নির্বাচন হয়েছে ততবারই এ দেশে হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত হয়েছে। এর সমাধানের পথ সরকারকেই দিতে হবে। সরকার যদি এখনই এর পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আগামী উপজেলা নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে যত দ্রুত সম্ভব বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি তুলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের ওপর নির্যাতনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। নির্বাচন আসলে আমাদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আমরা বলতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান এবং এসব সমস্যা নিরসনে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হোক।’