রাজশাহী প্রতিনিধি :
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘কেউ যদি উপাসনালয়ে, পূজামণ্ডপে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, বাধা প্রদান করে, আমরা তাদের কঠোর হস্তে দমন করব। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। এবার দুর্গাপূজায় মাদ্রাসা ছাত্ররা পূজামণ্ডপ পাহারায় থাকবে।’
রোববার রাজশাহীর গোদাগাড়ীর খেতুরিধাম পরিদর্শনের পর হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজায় কোন চ্যালেঞ্জ নেই। নাশকতার আশঙ্কা করি না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্ভয়ে সনাতনী ভাই-বোনেরা দুর্গোৎসব পালন করতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার মিটিং করব। সেখানে আমরা ডিআইজি, জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেব। কেউ যদি পূজামণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সে যে-ই হোক, আমরা তাকে ছাড় দেব না। আইনের আওতায় এনে বিচার করব।’
দুর্গাপূজার মণ্ডপ মাদ্রাসা ছাত্রদের দিয়ে পাহারার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বা হবে বলে মনে হয়, তাহলে স্থানীয় জনগণ ও মাদ্রাসা ছাত্রদের সম্পৃক্ত করে তাদের পূজামণ্ডপ পাহারা দেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বিরাজ করছে। সামনে যে শারদীয় দুর্গোৎসব, সনাতন ধর্মাবলম্বী যারা আছেন, তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা উৎসাহ উদ্দীপনা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উৎসব পালন করবেন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, সকলে সমানভাবে উৎসব পালন করবেন। দেশে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না।’
এর আগে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন রাজশাহী দারুস সালাম কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণের আকাঙক্ষা অনুযায়ী সংস্কার করতে কতদিন লাগবে তার আগাম মন্তব্য করা কঠিন। সময় বলে দেবে আমরা কতদিন আছি।
তিনি বলেন, এই সরকার পলিটিক্যালি কালচার ডেভেলপমেন্ট করতে চায়। আলোচনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দুইবারের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। কারণ আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনা স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়। আমেরিকায় নাই, বৃটেনে মেয়াদ পূর্তি হওয়ার আগেই চলে যায়, অথচ স্বাধীনতার পর থেকে দেখছি, আমাদের এখানে একবার বসলে ক্ষমতা ছাড়ার মানসিকতা থাকে না।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, আমরা কমিশনকে পুনর্গঠিত করে নির্বাচন ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেব। প্রতিটি মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। জনগণের রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিব।
ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন জানান, মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড হলে এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেয়া হতো না। অনেক ছাত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছে। মহিলারা হিজাব পরে জুডিশিয়ারি এর ভাইভা দিতে গেলে তাদের ফেরত দেয়া হয়েছে। আবার ঐ একই ব্যক্তি যখন পরের বছর চুল খোলা রেখে ভাইভা দিয়েছেন, উনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিচারক হয়ে গেছেন। আগামী দিনে এই সংস্কৃতির পরিবর্তন হবে। মাদ্রাসাগুলোতে আরবি ভাষা শেখানোর উপর জোর দেন তিনি।