চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে একজন নিহত ও কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (২৯ জুন) সকাল নয়টার দিকে উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় বিএসআরএম ইস্পাত কারখানার অদূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ষাট বছর। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতরা হলেন- আরিফ (৩০), আব্দুল মোতালেব (৫২) এবং স্বপ্না রাণী নাথ (৪৯)। তারা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর বড়পোল থেকে স্টার লাইন পরিবহনের বাসটি যাত্রী নিয়ে ফেনী যাচ্ছিল। ফৌজদারহাটে বিএসআরএম কারখানা পার হয়ে আনুমানিক পৌনে এক কিলোমিটার পৌঁছার পর সেটির চাকা ফেটে যায়। এ সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে যায় এবং সেখান থেকে সড়কের অপরপাশে (চট্টগ্রামমুখী অংশ) পড়ে গিয়ে উল্টে যায়। বাসের ভেতরে চাপা পড়েন যাত্রীরা।
সকালে বিএসআরএম কারখানার কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি মাইক্রোবাস নগরী থেকে লিংক রোড হয়ে ফৌজদারহাটে প্রবেশ করে। কারখানায় যাবার পথে তারা এ ঘটনা দেখতে পান। তখন বিএসআরএম কর্মকর্তাদের কয়েকজন এবং তাদের কারখানা থেকে পণ্য পরিবহনকারী যানের চালকদের এনে বাসের জানালা ভেঙে ভেতর থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করেন।
বিএসআরএমর কর্মকর্তা এস এম আবু ইউসুফ সোহেল বলেন, ‘গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডে উঠে গাছপালা ভেঙে সড়কের ওপর পড়ে উল্টে যায়। উল্টে যাওয়া বাসের ভেতর থেকে আটকে পড়া কয়েকজন যাত্রী বাঁচার জন্য চিৎকার করছিল। আমি প্রথমে ৯৯৯-এ ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করি। তারা ঘটনাস্থলে আসার আগে আমরা বাসের জানালা ভেঙে কয়েকজনকে উদ্ধার করি।’
ট্রাকচালক মো. হানিফ বলেন, ‘বাসের ভেতরে ১৪-১৫ জন আটকা ছিল। কয়েকজন নারী এবং শিশুও ছিল। ফায়ার সার্ভিসের টিম আসার পর আমরাসহ ভেতরে ঢুকে সবাইকে উদ্ধার করি। একজন মধ্যবয়সী লোককে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের কর্মী মো. সবুর বলেন, ‘১৪-১৫ জনের মতো আহত হয়েছে। গুরুতর আহত তিনজনকে আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনেছি। একজনকে আমরা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘটনাস্থলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।’
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক জানিয়েছেন, আহত তিনজনকে হাসপাতালের দুই নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত আছে।
হাইওয়ে পুলিশের বার আউলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। চাকা ফেটে যাওয়ায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেছে। ভেতর থেকে সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিচয় আমরা শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’