শুক্রবার , ১০ অক্টোবর ২০২৫ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জাতীয়
  10. জেলার খবর
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. প্রবাসের কথা
  14. বরিশাল
  15. বিনোদন

চট্টগ্রাম অঞ্চল বন সংরক্ষক মোল্যা সিন্ডিকেটে বনায়ন ধ্বংস, ঘুষ নিতে করেছেন সিন্ডিকেট

প্রতিবেদক
Newsdesk
অক্টোবর ১০, ২০২৫ ৬:১৫ অপরাহ্ণ

বিশেষ সংবাদদাতা :

চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিএফ মোল্যা রেজাউল করিমের অলিখিত ‘ক্যাশিয়ার’ কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও নুরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে রয়েছে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া ডেপুটি রেঞ্জার হাবিবুল হক, রশিদ,রতন লাল,ছালাম, তোসাদ্দেক, বেলাল, আব্দুল হামিদ, ফরেস্টার আলী নেওয়াজ, আবুল কালাম। তাদের প্রত্যেককে সিএফ মোল্যা রেজাউল করিম ও ডিএফও নুরুল ইসলামের পছন্দের জায়গায় বসিয়ে রেখে বনের সকল ধরনের খাত থেকে মোটা অংকের টাকা দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে বনভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে বলে পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোর অভিযোগ তুলেছে। বন সংরক্ষক (সিএফ) মোল্যা রেজাউল করিম নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে বিগত সরকারের আমলে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। জুলাই বিপ্লবের পর ভোল পাল্টে বনে যান সংস্কারপন্থি। চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি বিভাগ ও চেক স্টেশন থেকে চাঁদাবাজি করতে তার অনুগত বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে গড়ে তুলেছেন মোল্যা সিন্ডিকেট। অভিযোগ উঠেছে, আলী নেওয়াজকে দায়িত্ব দিয়েছে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ দুই রেঞ্জে। রাজারকুল রেঞ্জের দাড়িয়ারদিঘী ও আপাররেজু বিটের দুই ডেপুটি রেঞ্জারকে বদলি করে সিএফ ও ডিএফও’র পছন্দের ফরেস্টার আলী নেওয়াজকে রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসাবে বসিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রে জানা গেছে, চাকরি জীবনের শুরুতে রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা পদে প্রশিক্ষণকালেই মোল্যা রেজাউল ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েন। কাপ্তাই রেঞ্জে সেগুন বাগান বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে তৎকালীন সহকারী বন সংরক্ষক শাহাবুদ্দিন মোল্যা রেজাউলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেও বন বিধ্বংসী কার্যক্রম থামাতে পারেননি। ফেনী ডিভিশনের দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি বাগান সৃজন ও ইকোপার্ক প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন। তদন্তে প্রমাণ পেয়ে তৎকালীন প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুছ আলী মোল্যা রেজাউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বন মন্ত্রণালয়ে লিখিত প্রস্তাব পাঠান। যদিও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগিতায় প্রস্তাবের সেই ফাইল মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। মোল্যা রেজাউল বাগেরহাট ডিভিশনের দায়িত্বে (ডিএফও) থাকাকালীন তৎকালীন সরকারের আমলে পিরোজপুরে ইকোপার্ক নির্মাণ প্রকল্পের বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজের নিকট হেল্প প্রজেক্টের শ্রমিক মজুরিসহ অন্যান্য কাজের বাবৎ টাকা চাওয়ায় মারধর করেছে বিট কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনকে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে রেঞ্জ অফিসে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রাজারকুল রেঞ্জের আপাররেজুর সাবেক বিট কর্তকর্তা আমজাদ। রেঞ্জ অফিসে সিসিটিভি রয়েছে ঘটনার ফুটেজ রেকর্ড আছে রেঞ্জ অফিসে। এঘটনা তিনি বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্হা নেয়নি বলেও জানান আমজাদ হোসেন। রাজারকুল রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নির্বিচারে চলছে গাছ নিধন ও বনভূমি দখল। সেই সাথে প্রকাশ্যে গাছ পাচারের ঘটনা ঘটছে । এছাড়াও সুফল বনায়ন নিয়ে চলেছে হরিলুট। এছাড়াও বনভুমি বিক্রি ও পাহাড় কেটে পাঁকা দালান নির্মাণে সহযোগীতা করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে খোদ রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজ ফরেস্টার। মাসোহারা পাচ্ছে সিএফ মোল্যা রেজাউল করিম ও ডিএফও নুরুল ইসলাম। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন চার বিট রাজারকুল, আফাররেজু, দাড়িয়ারদীঘি, পাগলিরবিল বিট। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন এলাকাগুলোতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা,বনভুমি বিক্রি ও মূল্যবান গাছ কেটে পাচারের ঘটনা রীতিমতো পরিবেশবাদী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এতে লাভবান হচ্ছে রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজের মাধ্যমে সিএফ ও ডিএফও। এদিকে, রেঞ্জ কর্মকর্তার যোগসাজশে দিন-রাত গাছ কাটা এবং কাঠ পাচার অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্টদের রহস্যজনক নিরবতা পালন করছে বলে অভিযোগ।রীতিমত রেঞ্জ কর্মকর্তার নিরব ভুমিকার কারণে কাঠ চোরেরা আস্কারা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে গাছ নিধনে মেতে উঠেছে।

স্থানীয় পরিবেশ প্রমীরা জানান, সেখানে সবুজ প্রাকৃতিক বিভিন্ন মূল্যবান গাছপালা এবং পাহাড় কেটে চাষের জমি করেছে। এভাবে পাহাড় কাটা, বনভূমি দখল করা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে পরিবেশ প্রেমিরা মনে করেন।এভাবে পাহাড় এবং বনের গাছ কাটলে খুব অচিরেই কক্সবাজারের বনভুমি ধ্বংস হবে করেন সচেতন মহলের ধারণা। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন বনভূমিতে স্হাপিত প্রতিটি পানের বরজ মালিকদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা যায় রেঞ্জ কর্মকর্তার মাধ্যমে সিএফ ও ডিএফও’র পকেটে।নতুন করে কেউ যদি পানের বরজ করতে চাই তাকেও গুনতে হয় মোটা টাকা,যদি না দেয়া হয় তাহলে চলে উচ্ছেদের নামে তাণ্ডব। মূল কথা ওই রেঞ্জের বনভূমিতে কোনপ্রকার স্হাপনা করতে গেলে কর্তা বাবুকে দিতে মোটা অংকের টাকা। দাড়িয়ারদীঘি বন বিটে নির্বিচারে বনভূমি দখল, বিক্রি, পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি নির্মাণ, বনের গাছ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজের সাথে বনভূমি অবৈধ দখলদাররা যোগসাজশে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিযোগ।দাড়িয়ারদীঘিতে বেপরোয়া গতিতে পাহাড় কাটা, বন উজাড়, বনভূমি অবৈধ দখল, সামাজিক বনায়নের প্লট দেয়ার নামে টাকা আদায়, অবৈধ করাতকল স্থাপন সহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। ইসরায়েল হোসেন বিট কর্মকর্তা থাকাকালীন তাঁর সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠে শীর্ষ পাহাড়খেকোদের সাথে। নতুন করে আর কোন মামলা না হওয়ার বিশেষ গোপন চুক্তিতে পাহাড় কাটার ‘লাইন’ দেন বনভূমি অবৈধ দখলদার সিন্ডিকেটকে।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন রক্ষক না হয়ে ভক্ষকের ভুমিকা পালন করছিল। রাজারকুল রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে নির্বিচারে নিধন করা মুল্যবান গাছগুলো পাচার করে যাচ্ছে।এতে করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান বৃক্ষ দিনদিন শুন্য হয়ে ন্যাড়া ভুমিতে পরিণত হচ্ছে। চোরাই কাঠ পাচারকারী চক্র বনের মূল্যবান গাছ কেটে অন্যত্র পাচার করে দিচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজ এ ব্যাপারে নিরব ভুমিকা পালন করছেন।বনের গাছ চুরি অব্যাহত থাকায় সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দিনদিন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ‘সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড (সুফল) প্রজেক্ট’ এর আওতায় সরকারের গৃহিত নতুন বনায়ন কর্মসুচী এই রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা ভেস্তে যেতে বসেছে।খোদ রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সুফল প্রকল্পের অধীনে টেকসই বনায়ন বিকল্প জীবিকায়ন প্রকল্পের সৃজিত বনায়ন বিফলে চলে গেছে। গত জানুয়ারিতে সুফল বনায়নে আগাছা পরিস্কারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। সুফল বনায়নের বেশির ভাগ বিভিন্ন প্রজাতির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী চারা গাছ মারা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বনাঞ্চলের মুল্যবান গাছ কেটে পাচার সহজতর এবং দ্রুত অন্যত্র পাচারের জন্য সংরক্ষিত বনের ভেতর গাছ ও পাহাড় কাটছে কাঠ পাচারকারী ও বনভূমি দখলদাররা। কাঠ চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সাথে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে কাঠ ও পাহাড়ি পাথর পাচার করে পকেট ভারি করছে রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজ। নির্বিঘ্নে ডাম্পার যোগে দিনে ও রাতে কাঠ পাচার করা হচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দালান নির্মাণে সহযোগীতাও করেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা।ওই এলাকায় এধরনে প্রতিটি অবৈধ কাঁচা পাকা দালান থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে বলে অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বনজায়গীরদার (ভিলেজার) জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে দিনে ও রাতে গাছ কাটা যাচ্ছে। এমনকি মুল্যবান গাছ ছাড়াও বনাঞ্চল থেকে লাকড়ী যাচ্ছে রামুর এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। রেঞ্জে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন করেছে কাঠ চোরেরা। তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা এসব এলাকা পরিদর্শন করলে শতশত সদ্যকাটা গাছের মুথা পাওয়া যাবে। রেঞ্জ কর্মকর্তা মাঝে মধ্যে টহলে গিয়ে গাছ নিধন দৃশ্য দেখেও এড়িয়ে যান।কারণ হিসেবে তারা বলেন, প্রতিটি নিধন হওয়া গাছের টাকা পান রেঞ্জ কর্মকর্তা।অথচ উক্ত বনাঞ্চলে এসব গাছ বড় করতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।গাছ বড় করতে লেগেছে দীর্ঘ সময়।অথচ বনের রক্ষক রেঞ্জ কর্মকর্তা কাঠ চোরদের সাথে আতাত করে এসব গাছ অতিঅল্প সময়ে মোটা টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে।কাঠ চোরকারবারীদের সাথে তার রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক।ফলে রেঞ্জ কর্মকর্তা যোগসাজসে পাচার করে দিচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। এব্যাপারে রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা টিএম আলী নেওয়াজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয় অস্বীকার করেন।

শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামকে টাকা দিলেই বনাঞ্চলে সবই জায়েজ হয়ে যায়। ঘুষের বেধে দেওয়া টাকা দিলেই পাকা দালান করতে রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামের কার্যালয় থেকে কোন রকমের বাধা আসে না। রেঞ্জে বেশিরভাগ সংরক্ষিত বনভূমির জমি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থাপনা করার সুযোগ মিলছে। টাকায় কেনা সেই জমিতে দালান করতে বন বিভাগের শিলখালী কর্মকর্তা আবুল কালামকে ম্যানেজ করলেই হয়। এ কারণে দিন দিন বন বিভাগের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। এ সুযোগে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বনের গাছ কেটে জমি দখলে নিয়ে গড়ে তুলছে ঘর-বাড়ি। এটি বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি বলে ধারণা করাটাও ভুল হবে বলে জানান স্থানীয় অনেকে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে জমিগুলো নিয়ে সেখানে নির্মাণ করছেন বড়বড় দালান ও আধাঁপাকা ঘরবাড়ি। এতে করে বনায়নের নাম করে দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে শ’ শ’ একর বনভূমি। স্থানীয়দের অভিযোগ মতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, সুফল বনায়নে হরিলুট করে সরকারের বিপুল টাকা পকেটভারি করেছে আবুল কালাম। এছাড়াও বনভুমি বিক্রি ও পাহাড় কেটে পাকা দালান নির্মাণে সহযোগীতা করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছেন খোদ রেঞ্জ কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি বৃক্ষ নিধন হচ্ছে শিলখালী রেঞ্জের জাহাজপুরা, মাথাভাঙা, কচ্ছপিয়া, মারিছবনিয়া,হাজমপাড়া, কচ্ছপিয়া, নোয়াখালী পাড়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে। রেঞ্জের আওতাধীন এলাকাগুলোতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বনভুমি বিক্রি ও মূল্যবান গাছ কেটে পাচারের ঘটনা রীতিমতো পরিবেশবাদী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এদিকে, রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামের যোগসাজশে দিন-রাত গাছ কাটা এবং কাঠ পাচার অব্যাহত থাকলেও রহস্যজনক নিরবতা পালন করছে উর্ধতন কর্মকর্তারা। রীতিমত বন কর্মকর্তার নিরব ভুমিকার কারণে কাঠ চোরেরা আস্কারা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে গাছ নিধনে মেতে উঠেছে। শিলখালী রেঞ্জে সংরক্ষিত বনাঞ্চল রয়েছে। এই রেঞ্জে শতবর্ষীয় মাদার ট্রি গর্জন, সেগুন, করই, গামারী, জারুল, জাম, মেহগনী, তেলসুর ও সিভিটসহ বিভিন্ন প্রজাতির মুল্যবান গাছ দৈনন্দিন নি:শেষ হয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় কাঠ চোরাকারবারিরা দিনে-রাতে প্রতিযোগিতামুলক ভাবে মুল্যবান গাছ নিধন চালালেও রেঞ্জ কর্মকর্তা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ রয়েছেন বলে জানান সচেতন মহল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিলখালী রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে নির্বিচারে নিধন করা মুল্যবান গাছগুলো ডাম্পার (মিনি ট্রাক) যোগে সরবরাহ করে যাচ্ছে সিন্ডিকেট সদস্যরা। এতে করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান বৃক্ষ দিনদিন শুন্য হয়ে ন্যাড়া ভুমিতে পরিণত হচ্ছে। চোরাই কাঠ সরবরাহকারীচক্র বনের মূল্যবান গাছ কেটে অন্যত্র সরবরাহ করে দিচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম এ ব্যাপারে কোন ধরণের ভুমিকা বা পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। বনের গাছ চুরি অব্যাহত থাকায় সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ‘সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড (সুফল) প্রজেক্টথ এর আওতায় সরকারের গৃহিত নতুন বনায়ন কর্মসুচী এই শিলখালী রেঞ্জে ভেস্তে যেতে বসেছে। খোদ শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালামের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সুফল প্রকল্পের অধীনে টেকসই বনায়ন বিকল্প জীবিকায়ন প্রকল্পের সৃজিত বনায়ন বিফলে চলে গেছে। সুফল বনায়নে আগাছা পরিস্কারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অযত্ন-অবহেলায় সুফল বনায়নের বেশির ভাগ বিভিন্ন প্রজাতির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী চারা গাছ মারা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বনাঞ্চলের মুল্যবান গাছ কেটে পাচার সহজতর এবং দ্রুত অন্যত্র সরবরাহের জন্য সংরক্ষিত বনের ভেতর গাছ ও পাহাড় কাটছে কাঠ চোর ও বনভূমি দখলদাররা। শিলখালী, জাহাজপুরা, মাথাভাঙা, কচ্ছপিয়া, হাজমপাড়া ্নোয়াখালীপাড়া কাঠ চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে কাঠ ও পাহাড়ি পাথর সরবরাহ করে পকেট ভারি করছে রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম। নির্বিঘ্নে ডাম্পার যোগে দিনে ও রাতে কাঠ সরবরাহ করা হচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দালান নির্মাণে সহযোগীতাও করেছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা। ওই এলাকায় এধরনে প্রতিটি অবৈধ কাঁচা পাকা দালান থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বনজায়গীরদার (ভিলেজার) জানান, চকিদারপাড়া, শিলখালী, জাহাজপরা, হাজমপাড়া, মাথাভাঙা, মারিছবনিয়া, কচ্ছপিয়া, নোয়াখালীপাড়া সহ বিভিন্ন পয়েন্টে দিনে ও রাতে সেগুন, গর্জন ও সিভিট গাছ কাটা যাচ্ছে। আরও অভিযোগ, নিধন হওয়া চোরাই কাঠ ভর্তি গাড়িগুলো শিলখালী রেঞ্জ অফিসের সামনের সড়ক দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। এমনকি মুল্যবান গাছ ছাড়াও বনাঞ্চল থেকে লাকড়ি যাচ্ছে টেকনাফ এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। তারা আরও জানান, শিলখালী রেঞ্জে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন করেছে কাঠ চোরদল। তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা এসব এলাকা পরিদর্শন করলে শতশত সদ্যকাটা গাছের মুথা পাওয়া যাবে। রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম মাঝে মধ্যে টহলে গিয়ে গাছ নিধন দৃশ্য দেখেও এড়িয়ে যান।

কারণ হিসেবে তারা বলেন, প্রতিটি নিধন হওয়া গাছের টাকা পান রেঞ্জ কর্মকর্তা। অথচ উক্ত বনাঞ্চলে এসব গাছ বড় করতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গাছ বড় করতে লেগেছে দীর্ঘ সময়। অথচ বনের রক্ষক রেঞ্জ কর্মকর্তা কাঠ চোরদের সঙ্গে আঁতাত করে এসব গাছ অতিঅল্প সময়ে মোটা টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে। কাঠ চোরকারবারিদের সঙ্গে তার রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। ফলে রেঞ্জ কর্মকর্তরা যোগসাজসে নিয়ে যাচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। এবিষয়ে শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এবিষয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিয়েও রিসিভ না করাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন অফিসে অভিযান চালিয়ে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন দুদক কর্মকর্তা।দুদকের নথি থেকে জানা গেছে, রেজাউল করিমের আস্থাভাজন হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রাম ফরেস্ট একাডেমির ফরেস্টার আব্দুল হামিদের মধ্যস্থতায় এ বদলি বাণিজ্যের বিপুল অর্থ লেনদেন করেন। ফেনীতে বাগান প্রকল্পে ১ লাখ গাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মোল্যা রেজাউল করিম জানান, আপনার এসব বিষয়ে এত ইন্টারেস্ট কেন।বক্তব্যের জন্য প্রতিবেদককে অফিসে যেতে বলে কল কেটে দেয় তিনি।

সর্বশেষ - রাজনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৩

রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে ১১৪ মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ

নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা নীরবসহ ৭ জনের কারাদণ্ড

নিখোঁজ এমপি আনোয়ারুল আজিমের ‘লাশ’ কলকাতা থেকে উদ্ধার

আওয়ামী আমলের প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী

কিয়েভে ছয় বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আকার ছোট হওয়া উচিত ছিল, বাজেট বাস্তবায়ন সহজ হবে না: আমীর খসরু মাহমুদ

দিনে বাড়লেও কমবে রাতের তাপমাত্রা, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে ৬ জেলায়

একুশে পদক পাচ্ছেন ১৪ বিশিষ্টজন ও জাতীয় নারী ফুটবল দল

ডিজিএফআইয়ের সা‌বেক ডিজি সাইফুল আলমের ব্যাংক হিসাব স্থগিত