মঙ্গলবার , ২৭ আগস্ট ২০২৪ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

এনায়েতপুর থানায় ১৫ পুলিশ হত্যা: মামলার আসামি আ.লীগ নেতাসহ ৬ হাজার

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ২৭, ২০২৪ ৭:৫৫ অপরাহ্ণ


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ ১৫ পুলিশকে হত্যার ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। হামলায় এনায়েতপুর থানায় চার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল ও এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসিবুল্লাহ। এর আগে, গত রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে এনায়েতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ছয় হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলায় এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুল্লুক চাঁদ, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ভূঁইয়ার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা এক আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি করেন এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু। পুলিশ ওই দাবি মেনে নেয়নি। তার অবৈধ দাবি মেনে না নেওয়ায় পুলিশের ওপর তার ক্ষোভ ছিল। পরে ওই আসামির বিরুদ্ধে মামলাও নেয় পুলিশ। পরে বাচ্চুর নেতৃত্বে ৪৫০-৫০০ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী থানা ঘেরাও করে। সে সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাককে অপসারণের দাবিও করেছিলেন তিনি। পরে আসামিরা এনায়েতপুর থানা পুলিশের ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা এনায়েতপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় ওসি আব্দুর রাজ্জাক হ্যান্ডমাইক দিয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। ওসি বলেন, ‘এই থানা সাধারণ জনগণের। আপনারা থানার কোনও ক্ষয়ক্ষতি করবেন না।’

এ কথায় ছাত্র-জনতারা চলে যায়। পরে ১ নম্বর আসামি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চুর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় আসামিসহ পাঁচ থেকে ছয় হাজার দুষ্কৃতকারী দেশি অস্ত্র নিয়ে থানায় হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। আসামিরা পুলিশের কোয়ার্টার ও ওসির বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেখে পুলিশ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আসামিরা থানা কম্পাউন্ডে উপপরিদর্শক (এসআই) তহছেনুজ্জামান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ওবায়দুর রহমান, কনস্টেবল আরিফুল আজম, রবিউল আলম শাহ, হাফিজুল ইসলাম, শাহিন, রিয়াজুল ইসলামকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। একপর্যায়ে আসামিরা থানা ভবন ধ্বংস ও জীবিত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে ভেতরে ঢুকে যায়। পুলিশের ও জনসাধারণের জমা দেওয়া অস্ত্র ও গুলি লুট করে। পরে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে থানার ভেতর ও বাইরে থাকা অফিসার ও ফোর্সকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক, এসআই আনিছুর রহমান, এসআই রহিজ উদ্দিন খান, এসআই প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, কনস্টেবল আব্দুল সালেক, কনস্টেবল হানিফ আলী থানার পাশে বাবু মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন। আসামিরা তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাদেরও পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় নারী কনস্টেবল রেহেনা পারভীনকে মারধর করে টানাহেঁচড়া করে যৌন হয়রানি করে। পরবর্তীতে বিকালে সেনাবাহিনীর একটি দল থানা এলাকায় পৌঁছে নিহত পুলিশ সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পাঁচটি পিস্তল, আটটি ম্যাগাজিন, একটি চায়না পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, চারটি চায়না রাইফেল, ৩৭টি চার্জার, দুটি চায়না রাইফেল টাইপ, দুটি ম্যাগাজিন, ছয়টি ১২ বোর শটগান, একটি ৩৮ মিমি গ্যাসগান লঞ্চার, ৭.৬২/৩৯ মিমি গুলি ১৬৮ রাউন্ড, ৭.৬২/২৫ মিমি গুলি ১৬ রাউন্ড, ৯/১৯ মিমি গুলি ৬০ রাউন্ড, ১২ রোব শটগান (রাবার কার্তুজ) ২২৭ রাউন্ড, ১২ রোব শটগান (লেটবল কার্তুজ) ৩৫৯ রাউন্ড, লংরেঞ্জ গ্যাসশেল ৩৮ রাউন্ড ও শর্টরেঞ্জ গ্যাসশেল ৩৬ রাউন্ড লুট করে নিয়ে যায়।

এ ছাড়া আসামিরা একটি ডাবল কেবিন ও একটি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ ভ্যান, পুলিশ সদস্যদের ১৫টি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাক, বিভিন্ন সময় আটক করা নতুন-পুরাতন ১২টি মোটরসাইকেল ও থানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, ওয়াকি-টকি পুড়িয়ে দেয়। এতে এনায়েতপুর থানায় চার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ১৫ পুলিশ হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।’

সর্বশেষ - জাতীয়

আপনার জন্য নির্বাচিত