মাগুরা প্রতিনিধি :
মাগুরার বহুল আলোচিত আট বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করেন।
শুনানি শেষে বিচারক আগামী ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালতে এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্যান্য আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে চার আসামি—শিশুটির বোনের স্বামী সজিব শেখ, শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি রোকেয়া বেগম ও দেবর রাতুল শেখ—কে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলাটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উপদেষ্টা এবং প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ নেন।
আদালত সূত্র জানায়, মূল আসামি হিটু শেখের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায়, সজিব ও রাতুল শেখের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায়, এবং রোকেয়া বেগমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের অ্যাডভোকেট সমাজী জানান, তদন্ত প্রতিবেদন, আসামির জবানবন্দি ও অন্যান্য নথির ভিত্তিতে অভিযোগ গঠনের আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করে। বিচারক আসামিদের জানান, তারা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন, তবে তা কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করে করতে হবে।
তবে বিচারকের প্রশ্নে আসামিরা নিজেদের দায় অস্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, শ্রীপুর উপজেলার আট বছরের শিশুটি ১ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয়। তাকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে ১৩ মার্চ ঢাকার সিএমএইচে শিশুটি মারা যায়।
ঘটনার পর শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে রোকেয়া বেগমের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের, সজিব ও রাতুল শেখের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের এবং হিটু শেখের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।