রবিবার , ৫ অক্টোবর ২০২৫ | ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জাতীয়
  10. জেলার খবর
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. প্রবাসের কথা
  14. বরিশাল
  15. বিনোদন

পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী সড়ক খানাখন্দে ভরা সড়ক ।। সীমাহীন দুর্ভোগে কয়েক লক্ষ মানুষ

প্রতিবেদক
Newsdesk
অক্টোবর ৫, ২০২৫ ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :

জেলা শহরের সাথে মির্জাগঞ্জ উপজেলার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র পথ পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী ভায়া বিনাপানি কচুয়া আঞ্চলিক সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত সহজে চলাচল করে থাকে পাশ্ববর্তী জেলার বরগুনার আরও চারটি উপজেলার মানুষ। বিকল্প সড়কপথ হিসেবে খুলনার সাথে পটুয়াখালী-ভোলা হয়ে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এ সড়ক দিয়ে।

যথাসময়ে মেরামত না করা এবং অবাধে অতিরিক্ত ওজনের যানবাহন চলাচল করায় সড়কের পিচ ও পাথর উঠে সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দের। এতে পানি জমে কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। এই সড়কে যানবাহনগুলো হেলে দুলে ঝুঁকি নিয়ে কোন রকম চলাচল করছে। মাঝে মধ্যে ভারী যানবাহন গর্তে আটকে ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে এই সড়কের অবস্থা বেহল হয়ে পড়েছে। পথচারিদেরও হেটে চলা দায় এই সড়কে। সবচেয়ে বেশী দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সড়ক সংলগ্ন বিদ্যালয়গুলোর কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

জানাযায়, দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সড়কের পটুয়াখালী চৌরাস্তা এলাকা থেকে মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী পযর্ন্ত ৯ কিলোমিটারের অবস্থা খুবই বেহাল। বিকল্প সড়ক না থাকায় মির্জাগঞ্জ উপজেলার প্রায় দুইলাখ মানুষ বাধ্য হয়ে এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে। এছাড়াও পাশ্ববর্তী বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর উপজেলা ও খুলনাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করে থাকেন।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। মির্জাগঞ্জে অংশ পড়েছে ৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই বেহাল।

জানা যায়, সুবিদখালী ইয়ার উদ্দিন খলিফা (র) এর সেতুর ঢাল হতে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট পযর্ন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কের কপালভেড়া, গোলদারবাড়ি, গাবতলা, মির্জাগঞ্জ থানার সামনে, মাজার এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে কাঁচা মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে খানা খন্দ। সড়কটির দুই পাশে এবং মাঝ বরাবর ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন ভারী যানবাহন, অটোরিকশা, ভ্যান,  রিকশা, এ্যাম্বুলেন্স চলছে সড়কে। তবে সড়কে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত ভরাট করতে সড়ক বিভাগ কিছু জায়গায় ইটের খোয়া বিছিয়ে বা হেরিংবন করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে ছোট যানবাহন গুলো (রিকশা, মোটরসাইকেল) চলাচল করতে দুর্ভোগে পড়ছে।

মির্জাগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মো. আল আমিন সিকদার বলেন, এই সড়ক বেহাল অনেক দিন ধরেই। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় সড়কটি একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেছে। মাত্র ৫ মিনিটের পথ যেতে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লেগে যায়। মানুষের এ ভোগান্তি আর কত বছর চলবে, তা কে জানে ?

রিকশা চালক হাতেম আলী বলেন, উপায় নাই তাই এই সড়কে রিকশা চালাই। প্রতিদিনই টুকিটাকি মেরামত করতে হয়। মাঝে মধ্যে রিকশা কাত হয়ে পড়ে যায়। তাই যাত্রী উঠতে চায় না। আগে প্রতিদিন ৫/৬ শত টাকা আয় হতো এখন রিকশার জমা টাকাও হয় না।

অটো চালক মো. সালাম মিয়া বলেন, ফেরীঘাট থেকে সুবিদখালী ব্রীজ পর্যন্ত যেতে সময় লাগে ৫মিনিট, কিন্তু সড়কটি খানা খন্দে ও কাদামাটিতে একাকার হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সময় লাগে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। তাও আবার পানিতে গর্ত বুঝা না গেলে হেলে পরে যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যা মেরামত করতে প্রতিদিন কিছু না কিছু টাকা পয়সা খরচ হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রাস্তা সংলগ্ন বাড়ীর মো. রফিক গোলদার বলেন, এ সড়কে মানুষের ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী কারন বর্ষা মৌসুমে কাদা-পানিতে এক ধরনের ভোগান্তি। বর্ষার পর রোদ উঠলে কাদামাটি শুকিয়ে ধূলার মধ্যে মানুষের ভোগান্তি হয়। বর্ষা মৌসুমে কোমলমতি শিশুদের স্কুলে যেতে ভোগান্তি চরমে পৌছে। শুকনো মৌসুমে ধূলা-বালিতে এলাকা থাকে সব সময় ধূলাচ্ছন্ন। সে সময় রাস্তা সংলগ্ন বাসিন্দাদের দেখা দেয় নানান রোগ বালাই।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. হানিফ আকন বলেন, এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষ। সড়ক ও জনপদ বিভাগে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকৌশলী মো. জামিল আক্তার লিমন বলেন, দুই তিন বছরের মধ্যে এই সড়কে কোন বড় ধরণের মেরামতের কাজ হয়নি। পটুয়াখালী চৌরাস্তা থেকে মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী পযর্ন্ত ৯ কি.মি সড়কের সংস্কারের জন্য ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার দরপত্র অনুমোদনের পর কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। বর্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ - রাজনীতি