অপরাধচিত্র প্রতিবেদক:
আর্তমানবতার সেবায় কাজ করার কথা থাকলেও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যেন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মানুষের সেবার চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের আখের গোছাতেই দক্ষ। রেড ক্রিসেন্টে প্রকাশ্যেই চলেছে নিয়োগ বাণিজ্য। নিয়োগ বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অন্যতম কুশিলব ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যানের সিকিউরিটি সহকারী জামিরুল। সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে বিশেষ ‘টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশনে’ জামিরুল অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যেমে ফুলেফেঁপে উঠেছেন। গড়ে তুলেছেন বিত্ত-বৈভবের পাহাড়, জামিরুল অবৈধ টাকায় নিজ মেয়ের নামে করেছেন পাচতলা পাকা বাড়ি।
অভিযোগ আছে ধান্ধাবাজ জামিরুল শুধু অবৈধভাবে নিয়োগ বাণিজ্য করেই টাকার পাহার গড়েছেন তাই নয় তিনি চাকরি দেয়া, চাকরি স্থায়ীকরণ, বদলি করানোর নামে অনেকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান। প্রতারক জামিরুল ভুক্তভোগী রাকিবুল হাসানের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেন গাইবান্ধা থেকে রেডক্রিসেন্ট হেড কোয়ার্টারে পোস্টিং দেয়ার জন্য। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও মোহাম্মদ রাকিবুল হাসানের পোস্টিংও হয়নি টাকাও ফেরত পাননি। টাকা চাইলেই জামিরুল টাকা ফেরত দিতে নানান টালবাহানা করেন। তৎকালীন সরকারের আমলে আওয়ামী নেতাদের দিয়ে হুমকী-ধমকী দিতেন।
আরেক ভুক্তভোগী শ্রী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, এমআরআরও কক্সবাজার এর চাকরি নিয়মিতকরণ করার জন্য মোহাম্মদ জামিরুল আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে চাকরি নিয়মিতকরণ তো দূরের কথা টাকা ফেরত চাইলে ঝামেলায় ফেলবেন বলে হুমকী দেন।
আর একজন চাকরি প্রার্থী মোহাম্মদ রুবেল হোসেনকে ইনফরমেশন অফিসার পদে চাকরি দেয়ার নামে নিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। দির্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মোহাম্মদ রুবেল হোসেন চাকরিতো পানইনি বরং খুইয়েছেন ৫ লাখ টাকা। মোহাম্মদ রুবেল হোসেন এখন পাওনা টাকার আদায়ের জন্য জামিরুল ও তার পরিবারের লোকজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
হলিফ্যামিলির একাধিক নারী চিকিৎসককে চেয়ারম্যানের ভয় দেখিয়ে অনৈতিকভাবে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন জামিরুল। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২১ সাল থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত রেডক্রিসেন্টে সাবেক চেয়ারম্যানের ছত্রচ্ছায় জামিরুল স্বরাজ কায়েম করেছিলেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জামিরুলের মেয়ে বিথীকে চাকরি দিয়েছেন সার্কুলার ও নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই। এছাড়াও তিনি নিয়োগ-বদলি, কেনাকাটা, টেন্ডার বাণিজ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জামিরুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি একজন ডাইরেক্টরকে বলেছি তিনি আপনার সাথে কথা বলবেন।
যেমন পিতা তেমন কন্যা, জামিরুলের মেয়ে বিথী ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি হয়েও বাবা জামিরুলের সিন্ডিকেট কানেকশনের কল্যাণে অফিস খরচে কয়েকবার বিদেশ ভ্রমণও করেছেন। অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া জামিরুলের মেয়ে বিথীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাবা চাকরি দিয়েছেন, কিভাবে দিয়েছেন আমি জানি না।