মো: নাইমুল হক দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:
জীবনের সমস্ত সঞ্চিত টাকা খরচ করে গড়ে তোলা সুপারি বাগান মুহূর্তেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বন বিভাগের অভিযানে। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কোনাফান্দা এলাকার কৃষক আব্দুল কাদির ও তার পরিবার।
সকালে বন বিভাগ এ অভিযান চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল স্ত্রীসহ ছয় সন্তান নিয়ে ওই পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করে আসছেন ।
কৃষক কাদির জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে তিনি পাহাড়ি এলাকায় বসতি গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তীতে টিলাগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করেন। কয়েক বছর আগে তিনি এক হাজারেরও বেশি সুপারি চারা রোপণ করেন। সময়ের সঙ্গে গাছগুলো বড় হয়ে উঠলেও হঠাৎ করেই বন বিভাগের লোকজন অভিযান চালিয়ে সব গাছ কেটে ফেলে। এতে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে এই পরিবারটি।
ভুক্তভোগী আব্দুল কাদির কথা হলে তিনি বলেন, আমারে আগে কোনো নোটিশও করেনি। সকালে আইসা একেবারে সব কেটে ফেলেছে। আমার সব শেষ, এতো কষ্ট করছি। সন্তানগুলোকে নিয়ে এখন আমি কেমনে চলবাম? আমি ক্ষতিপূরণ চাই।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কাদিরের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম বলেন, আমরার আর কোন সম্পত্তি নাই। সব শেষ করে দিয়ে গেছে পোলাপান গুলোরে নিয়ে বাঁচার আর কোন অবলম্বন রইল না।
শুধু কাদিরই নন, একই অভিযানে পাশের গ্রামবাসী জোসনা খাতুনেরও প্রায় পাঁচশো সুপারি চারা কেটে ফেলা হয় দাবী করছেন। তিনিও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, শুরুতেই যদি গাছ লাগাতে বাধা দেওয়া হতো তবে এত বড় ক্ষতির মুখে পড়তেন না। গাছ বড় হওয়ার পর তা কেটে ফেলা অমানবিক কাজ হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা মজনু প্রামানিক অপরাধ চিত্রকে জানান, অভিযানের আগে সাত দিনের সময় দিয়ে মৌখিকভাবে গাছ সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশনা মানেননি। পরে শনিবার অভিযান চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ওনি বন অঞ্চলের ২০ সেক্টর জায়গা সীমানা দিয়ে দখল করে আছেন যা ভেঙে দিয়েছি এবং সুপারি গাছগুলো কর্তন করি। এছাড়াও তিনি বনভূমির জায়গায় বসতি করে বসবাস করে আসছেন যা উচ্ছেদের জন্য জবরদখল মামলা প্রস্তাবনায় আছে।