আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর এবার বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। জবাবে পাল্টা হামলা চালানো শুরু করেছে পাকিস্তানও।
এদিকে যুদ্ধের উত্তাপ ছড়াতে না ছড়াতেই তার আঁচ লাগতে শুরু করেছে ভারতীয় অর্থনীতিতে। ডলারের বিপরীতে দাম পড়ে গেছে ভারতীয় রুপির।
বুধবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ভূখণ্ডে একাধিক স্থানে হামলা চালানোর পর, নন-ডেলিভারেবল ফরোয়ার্ড (এনডিএফ) বাজারে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দাম কমে গেছে। মঙ্গলবার দিনের শেষ বেলায় যেখানে প্রতি ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার মান ছিল ৮৪ দশমিক ৪৩ রুপি, সেখানে আজ বুধবার সকালে ৮৪ দশমিক ৬৪ থেকে ৮৪ দশমিক ৬৮ রুপিতে মিলছে এক ডলার।
এদিকে, এরই মধ্যে ভারতের হামলার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের হামলায় এ পর্যন্ত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের পাশাপাশি ভারতের একটি ড্রোন ও ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী রাজ্যে থাকা বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন। বুধবার (৭ মে) সকালে এক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
একইদিন সকালে আরেক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এর আগে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে হামলার পর ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে নিশানা বানানো হয়নি এ অভিযানে।