নারায়গঞ্জ প্রতিনিধি :
সারাদেশের বন্দরগুলোর অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য বন্দর গুলোতে বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্হাপনা চলে আসছে। বন্দরকেন্দ্রিক নানা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য সকল বন্দর গুলোকে সিন্ডিকেটমুক্ত করা হবে।’
সোমবার নারায়গঞ্জে বিআইডব্লিউটিসি’র ডকইয়ার্ড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পরে উপদেষ্টা কেরানীগঞ্জে পানগাঁও নৌবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিসি এর চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার বণিক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তাসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পানগাঁও বন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে রাজস্ব কর্মকর্তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরে আমদানিকৃত পণ্য খালাসের নির্দেশনা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘অবস্থানগত কারণে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত পানগাঁও একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌবন্দর। এ নৌবন্দরকে আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে বর্তমান সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ইতোমধ্যে পানগাঁও নৌবন্দরের সাথে সম্পৃক্ত সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম-পানগাঁ নৌরুটে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সমন্বয় করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রয়োজনভেদে যে সকল পণ্যের ভিজুয়াল ইন্সপেকশনেই সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়, সে সকল পণ্যের জন্য বুয়েট বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার নামে
দীর্ঘসূত্রিতা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না।’ এ সময় বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল এবং বন্দরটিকে লাভজনক করতে পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রিতা কমানোর নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি ঢাকার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণ করে পানগাঁওয়ে বিআইডব্লিটিএ তত্ত্বাবধানে জেটি এবং পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও নৌপথে ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও পর্যটন জাহাজ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন নৌ-উপদেষ্টা।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে বেসরকারি আনন্দ শিপইয়ার্ড পরিদর্শন কালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জাহাজ নির্মাণ শিল্প দেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। বর্তমান সরকার দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। আনন্দ শিপ ইয়ার্ড দেশে বিদেশে জাহাজ রপ্তানি করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে ও সুনাম বয়ে আনছে। সরকার জাহাজ নির্মাণ শিল্পে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ সময়ে আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মানাধীন বিআইডব্লিউটিসি’র এর চারটি সী ট্রাক এবং বিআইডব্লিউটিএ এর একটি সার্ভে ভেসেল নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ গুলো যেমন সন্দীপ হাতিয়া মহেশখালীতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগ লাগবে সরকার এ সকল রুটে নৌ যোগাযোগ স্থাপন করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিগত ১৫ বছরে কেবল ব্যক্তি স্বার্থে নৌপথের বিভিন্ন রুটে শুধু বেসরকারি জাহাজ চলাচলের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন উদ্যোগ ছিল না। কিন্তু আমরা সরকারিভাবে জনগণের চাহিদার কথা চিন্তা করে জনবান্ধব নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।