আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের রাজধানী দিল্লির লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে লাল কিলা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের বাইরে এই ঘটনা ঘটে।
লালকেল্লা একটি জনপ্রিয় পর্যটনস্থল এবং রাজধানীর অন্যতম জনবহুল এলাকা। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই প্রবল ছিল যে, কাছাকাছি থাকা যানবাহনগুলোতেও আগুন ধরে যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ঘটনাস্থলের ভয়াবহ দৃশ্যে একটি ভ্যানের দরজা বিস্ফোরিত এবং একটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত গাড়ি দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস্তায় শরীরের অংশ ছড়িয়ে পড়ে আছে। বিস্ফোরণের ধরন এখনো স্পষ্ট নয়।
সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, প্রথম অগ্রাধিকার আহতদের চিকিৎসা। ঘটনাস্থলে প্রায় দুই ডজন অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে এবং এলাকাটি সুরক্ষিত করা হয়েছে। এরপর ফরেনসিক ও কারিগরি বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ সংগ্রহ করবেন।
এদিকে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ হরিয়ানার ফরিদাবাদে দুটি আবাসিক ভবন থেকে প্রায় ৩,০০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা পরেই এই বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রেপ্তার জম্মু ও কাশ্মীরের চিকিৎসক আদিল রাথেরের কাছ থেকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব বিস্ফোরক জব্দ করা হয়। এর মধ্যে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট রয়েছে, যা সাধারণ সার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও মারাত্মক বোমায় রূপান্তরিত হতে পারে।
রোববার (৯ নভেম্বর) উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর থেকে রাথেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি শ্রীনগরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জৈশ-ই-মোহাম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন। পোস্টারগুলোতে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে জম্মু ও কাশ্মীরের আরেক চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিলের নাম উঠে এসেছে। তিনি ফরিদাবাদের আল-ফালাহ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন এবং ক্যাম্পাসে থাকতেন। তবে পুলিশ তার সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে কমপক্ষে দুটি বাড়ির সংযোগ খুঁজে পেয়েছে।
এসব স্থানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১২টি স্যুটকেস ভর্তি বিস্ফোরক উদ্ধার করে। এছাড়া ডেটোনেটর, টাইমারসহ বিস্ফোরক ডিভাইসের সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা সহকর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মারুতি সুজুকি সুইফট হ্যাচব্যাকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল ও কিছু গোলাবারুদ মজুদ ছিল। অনন্তনাগের জিএমসি হাসপাতালের একটি স্টাফ লকার থেকে দ্বিতীয় রাইফেল ও আরও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়, যেখানে রাথের গত বছর পর্যন্ত কাজ করতেন।
সোমবার (আজ) সকালে পুলিশ জানায়, জম্মু ও কাশ্মীর এবং ফরিদাবাদে অভিযান, গ্রেপ্তার ও উদ্ধারের মাধ্যমে তারা পাকিস্তানভিত্তিক জৈশ-ই-মোহাম্মদ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয় আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দের সঙ্গে যুক্ত একটি আন্তঃরাজ্য ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী মডিউলের সন্ধান পেয়েছে।
রাথের, শাকিল ও মহিলা চিকিৎসকসহ এখন পর্যন্ত মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


















